আইএফআইসি ব্যাংকের পর্ষদ থেকে বাদ সালমান এফ রহমান


 শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে এবং নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে। সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাঁকে সরিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করেছে।

নতুন পর্ষদে চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক এবং দুজন প্রতিনিধি পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে। আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে যে, আমানতকারী ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষা, ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিতকরণসহ জনস্বার্থে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।

২০১৫ সাল থেকে সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানও ব্যাংকটির পরিচালক ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। সরকারের পরিবর্তনের পর ঋণখেলাপির অভিযোগে তিনি পরিচালনা পর্ষদ থেকে বাদ পড়েন। সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি তুলে নিয়েছেন। এছাড়া, বন্ড সুকুক ছেড়ে তিনি ব্যাংক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হিসেবে প্রভাবশালী এই ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পলাতক বলে ঘোষণা করা হয়। কিছুদিন পর পুলিশ তাঁকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার ঘোষণা দেয়।

আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে যে, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এমডি মো. মেহমুদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবতাদুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ জহির, এবং সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ কাজী মো. মাহবুব কাশেমকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সরকারের ৩২.৭৫ শতাংশ শেয়ার থাকায় অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মনজুরুল হককে প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।

গত আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর একে একে আটটি বেসরকারি ব্যাংক বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়েছে। Advertisement এসব ব্যাংক তারল্যসংকটে ভুগছিল এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বদল করেছে।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এছাড়া, আভিভা ফাইন্যান্সের পর্ষদও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউসিবি ব্যাংকের পর্ষদও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিরুদ্দেশ রয়েছেন। নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, যারা ব্যাংকের টাকা ফেরত দেননি, তাঁদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না এবং টাকা উদ্ধারে সব ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একইসঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post